বাংলাদেশে ইনগুইনাল হার্নিয়ার চিকিৎসা, সাফল্যের হার 95%

রোগ নির্ণয়

শারীরিক পরীক্ষা করার সময়, ডাক্তার হার্নিয়া নির্ণয়ের অংশ হিসেবে স্ফীত জায়গাটি পরীক্ষা করবেন। সঠিক নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত টেস্টগুলি সুপারিশ করা হয়:

• অ্যাবডোমেন ও পেলভিক অর্গ্যানের স্পষ্ট ছবি পেতে, পেটের আলট্রাসাউন্ড করা হয়।
• সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে হার্নিয়েটেড টিস্যুতে প্রদাহ ও ফোলাভাবের পরীক্ষা করা হয়।
• আটকে যাওয়া বা বাধাপ্রাপ্ত অঙ্গ ও টিস্যু শনাক্তকরণের জন্য MRI স্ক্যান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
• হার্নিয়া মেরামত করার এবং এটিতে অ্যাক্সেস পাওয়ার সবচেয়ে নিরাপদ উপায় খুঁজে পেতে রেডিওগ্রাফ নেওয়া হয়।

উপরের সব টেস্টই তাৎপর্যপূর্ণ। এই টেস্টগুলির ফলাফলের উপর ভিত্তি করে কীভাবে হার্নিয়ার চিকিৎসা করা যায় তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়।

সার্জারি

প্রিস্টিন কেয়ার-এ অত্যাধুনিক ল্যাপারোস্কোপিক কৌশল এবং চিরাচরিত ওপেন সার্জারি পদ্ধতি উভয় ব্যবহার করেই হার্নিয়ার রোগীদের চিকিৎসা করা হয়। এই দুটি পদ্ধতি একে অপরের থেকে কিছুটা আলাদা।

• ওপেন হার্নিয়া সার্জারি: ওপেন হার্নিয়া সার্জারি একটি চিরাচরিত প্রক্রিয়া, যেক্ষেত্রে আক্রান্ত অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ইনসিশন করতে হয়। পেটের ভিতরের ত্বকের পার্ফোরেশন স্থায়ী থাকে এবং প্রোট্রিউডিং টিস্যুগুলিকে ঠেলে তাদের মূল অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। পেশীকে সাহায্য করতে এবং অঙ্গটি আরও একবার প্রসারিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে, স্বাস্থ্যকর টিস্যুগুলি হয় একসাথে সেলাই করা হয়, নয়তো গর্তের উপর একটি হার্নিয়া মেশ স্থাপন করা হয়।
• ল্যাপারোস্কোপিক হার্নিয়া সার্জারি– এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ন্যূনতম কাটা ছেঁড়ার মাধ্যমে হার্নিয়া বাদ দেওয়া হয়। সার্জারি প্রক্রিয়া চলাকালীন ল্যাপারোস্কোপ (এক প্রান্তে ক্যামেরা বসানো একটি ইনস্ট্রুমেন্ট) অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পর্যবেক্ষণ করতে ব্যবহার করা হয়। অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিতে প্রবেশ করার জন্য, 2-3টি ছোটো, কী-হোল সাইজের ছিদ্রগুলি সাধারণত পেট জুড়ে তৈরি করা হয়। পেটের ভিতরের ত্বককে শক্তিশালী করতে হার্নিয়া মেশ ব্যবহার করা হয়, অন্যদিকে হার্নিয়েটেড টিস্যু ও অঙ্গগুলিকে সেগুলির যথাযথ স্থানে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়।

ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি হার্নিয়া বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়াকে নিরাপদ, আরও দক্ষ করে তোলে এবং সুস্থ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াকে মসৃণ ও সহজ করে তোলে। তবে ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে সব রোগী উপকৃত হন না। তাই, আমাদের চিকিৎসকরা রোগীর জন্য সেরা পদ্ধতিটি বেছে নেন। আপনি আমাদের হার্নিয়া বিশেষজ্ঞের সাথে ফ্রি কনসাল্টেশনের শিডিউল ঠিক করতে পারেন।

ইনগুইনাল হার্নিয়া সার্জারির জন্য কীভাবে প্রস্তুত হবেন?

যদি আপনার ইনগুইনাল হার্নিয়া হয়, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সুপারিশ মেনে চলতে হবে। ইনগুইনাল হার্নিয়া থেকে নিরাময় পাওয়ার আগে আপনি সম্ভবত আপনার সার্জেনের কাছ থেকে নির্দেশনা পাবেন।

• মদ, তামাক ও ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
• অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন, ওয়ারফেরিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সহ আপনার রক্ত পাতলা করে এমন যেকোনো সাপ্লিমেন্ট ও ওষুধের ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে। না করলে অস্ত্রোপচারের সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে পারে।
• অ্যানাস্থেসিয়া বা ইনফেকশনের অ্যালার্জি থাকলে আপনার ডাক্তারকে জানাবেন।
• সার্জারির আগে খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। না হলে অ্যানাস্থেসিয়ার কারণে অবাঞ্ছিত প্রভাব পড়তে পারে।
• আপনার সমস্যা, সার্জারি, প্রত্যাশিত ফলাফল এবং এর সঙ্গে জড়িত ঝুঁকি সম্পর্কে আপনাকে পুরোপুরি অবহিত হতে হবে।
• সার্জারির দিন আরামদায়ক পোশাক পরবেন।
• সার্জারির আগে আপনার সমস্ত ইন্স্যুরেন্স ডকুমেন্টেশনের ব্যবস্থা করুন।
• সঙ্গে একজন সঙ্গী নিয়ে আসবেন।

সার্জারি করে ইনগুইনাল হার্নিয়া বাদ দেওয়ার পরে সার্জারি পরবর্তী যত্নের টিপস

সাধারণত সার্জারি করে ইনগুইনাল হার্নিয়া বাদ দেওয়ার পরে সুস্থ হয়ে উঠতে প্রায় 2 সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। অধিকাংশ রোগী সার্জারির পরে একই দিনে ছাড়া পেয়ে যান।

সার্জারি করে ইনগুইনাল হার্নিয়া বাদ দেওয়ার পরে সুস্থ হয়ে ওঠার কিছু উপায় এখানে তুলে ধরা হলো:

• ইনফেকশন এড়াতে আপনার ইনসিশন সাইট পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
• হালকা ব্যায়াম করতে থাকুন।
• অ্যালকোহল, তামাক বা ধূমপান করা এড়িয়ে চলুন।
• কাঁচা শাক-সবজি, ফল বা বাদাম এড়িয়ে চলুন, যা হজম করা কঠিন।
• মুখ বন্ধ করে নাক ঝাড়া ও হাঁচি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
• ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করুন
• ফলোআপ সেশনে যান
• সময়মতো আপনার জন্য নির্ধারিত ওষুধ খান।

সার্জারির পর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য নির্ধারিত ওষুধের পাশাপাশি উপরোক্ত সতর্কতাগুলো কঠোরভাবে মেনে চলুন।