লাইপোসাকশনের বিভিন্ন ধরনগুলি কী-কী?
দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে মেদ অপসারণে যে বিভিন্ন ধরনের লাইপোসাকশন সবচেয়ে কার্যকর, সেগুলি হল:
- টিউমসেন্ট লাইপোসাকশন- এটি একটি ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি, যাতে প্রচুর পরিমাণে লিডোকেইন ও এপিনেফ্রিন ব্যবহার করা হয়।এই সলিউশনগুলি সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট টিস্যুতে ইনজেক্ট দেওয়া হয়, যাতে সেগুলি ফুলে যায়। তারপর ক্যানুলা ব্যবহার করে ফ্যাটকে ইমুলেশন করা হয় এবং টিস্যুগুলো ভ্যাকুয়াম সাকশনের মাধ্যমে বের করা হয়।
- পাওয়ার-অ্যাসিস্টেড লাইপোসাকশন- নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, এই পদ্ধতিতে একটি বিশেষ ধরনের ক্যানুলা ব্যবহার করা হয়, যা একদিক থেকে অন্যদিকে ও সামনে-পিছনে অভিমুখে চলাচল করে এবং একটি মেশিন দিয়ে পরিচালিত হয়। এই ধরনের লাইপোসাকশন জটিল এলাকা থেকে মেদ অপসারণ করতে বা রোগীর পূর্বে লাইপোসাকশন সার্জারি হয়েছে এমন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। নির্দিষ্ট ফলাফল পেতে এটি এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় বিপুল পরিমাণে মেদ স্থানান্তর করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
- লেজার-অ্যাসিস্টেড লাইপোসাকশন– এটি একটি আধুনিক লিপোসেকশন, যেখানে লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেদ জমার স্থান বার্ন করা বা গলিয়ে ফেলা হয়। একটি লেজার প্রোব নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করানো হয় এবং ধীরে-ধীরে বের করে আনা হয়। এইভাবে এটি তাপ শক্তি নির্গত করার মাধ্যমে চর্বিকে গলিয়ে দেয়। সবশেষে নিরাপদে মেদ বের করতে সাকশন ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।
- আল্ট্রাসাউন্ড-অ্যাসিস্টেড লাইপোসাকশন- এটি ন্যূনতম কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে করা লাইপোসাকশনের আরেকটি ধরন, যেক্ষেত্রে মেদ থেকে মুক্তি পেতে আল্ট্রাসাউন্ড এনার্জি ব্যবহার করা হয়।ফ্যাট টিস্যু গলাতে থার্ড জেনারেশনের UAL ডিভাইস ব্যবহার করা হয় এবং বিশেষ ভ্যাকুয়াম ডিভাইসের মাধ্যমে এগুলো বের করা হয়।
টিউমসেন্ট ও পাওয়ার-অ্যাসিস্টেড লাইপোসাকশন মেদ অপসারণের ট্রিটমেন্ট হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি, উন্নত কৌশলগুলি, যেমন লেজার ও আল্ট্রাসাউন্ড-অ্যাসিস্টেড লাইপোসাকশন ত্বকের নরমভাব বাড়াতেও সহায়তা করে। এই আধুনিক ট্রিটমেন্টগুলি কোলাজেন উৎপাদনকে বাড়িয়ে তোলে, যার ফলে মেদ অপসারণের পরে ত্বক আরও মসৃণ হয়ে ওঠে।আপনি একজন বিশেষজ্ঞ প্লাস্টিক সার্জনের সাথে প্রতিটি লাইপোসাকশন পদ্ধতির উপকারিতা ও ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে আলোচনা করতে পারেন এবং আপনার পক্ষে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতিটি বেছে নিতে পারেন।
বাংলাদেশে লাইপোসাকশন সার্জারি করতে প্রিস্টিন কেয়ার-কে কেন বেছে নেবেন?
প্রিস্টিন কেয়ার-এ কার্যকর উপায়ে দেহের বাড়তি মেদ থেকে মুক্তি দিতে আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করা হয়।উন্নতমানের চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি আমরা রোগীদের জন্য চিকিৎসার সকল দিকও অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
- সেরা লাইপোসাকশন সার্জনদের সঙ্গে রোগীদের সংযুক্ত করা।
- হাসপাতালের কাগজপত্র ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতায় সহায়তা করতে ব্যক্তিগত কেয়ার কোঅর্ডিনেটর নিয়োগ করা।
- সার্জারির পরে বিনামূল্যে পরামর্শ দেওয়া ও সুস্থতার দিশা দেখানো।
এই সমস্ত পরিষেবা দেওয়ার মাধ্যমে প্রিস্টিন কেয়ার রোগীদের সার্জারির অভিজ্ঞতাকে সহজ করে তোলে। সার্বিকভাবে আমরা রোগীদের সার্বক্ষণিক সহায়তা দিয়ে থাকি এবং সম্পূর্ণ চিকিৎসা যাত্রায় তারা যাতে কোনও সমস্যায় না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখি।
কীভাবে আমি লাইপোসাকশন সার্জারির ফলাফল বেশি সময় ধরে পেতে পারি?
একবার আপনার লাইপোসাকশন সার্জারি হয়ে গেলে ডাক্তার আপনাকে আপনার সামগ্রিক জীবনধারায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেবেন। এই পরিবর্তনগুলি নিশ্চিত করবে যে, লাইপোসাকশনের মাধ্যমে যে অঞ্চলে চিকিৎসা করা হয়েছে, সেখানে মেদ জমা হবে না। যে পরিবর্তনগুলি আপনাকে করতে হবে, তা নিচে জানানো হল:
- ডায়েটে পরিবর্তন- শরীরের মেদ যাতে না বাড়ে, তার জন্য পরিমাণে কম ক্যালরি গ্রহণ করুন। পেট ভরা রাখতে এবং শর্করা ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমাতে দিনে একাধিকবার অল্প পরিমাণ খাবার খান। উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারে পরিবর্তন করুন, যা আপনার বিপাক ক্ষমতা বাড়াবে এবং বেশি ক্যালোরি বার্ন করতে সাহায্য করবে।
- শারীরিক কার্যক্রম– লাইপোসাকশন সার্জারির পর সাবকিউটেনিয়াস ফ্যাট জমা হওয়া থেকে বাঁচার আরেকটি উপায় হল ব্যায়াম। ব্যায়াম করার সময় আপনি আপনার দেহের অতিরিক্ত ক্যালোরি পুড়িয়ে ফেলেন, যা আপনার সঠিক আকৃতি বজায় রাখা সহজ করে তোলে এবং আপনার দেহের বিভিন্ন অংশে মেদ জমা হতে বাধা দেয়।
- মানসিক স্বাস্থ্য- অনেকের ক্ষেত্রে মেদ জমার পেছনে মানসিক স্বাস্থ্যও বড়ো অবদান রাখে। মানসিক চাপ হরমোনের ভারসাম্যহীনতার একটি বড়ো কারণ, যার ফলে মেদ জমতে থাকে। তাই লাইপোসাকশন সার্জারির পর মেদ জমতে না দেওয়ার জন্য স্ট্রেস লেভেল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে আপনি লাইপোসাকশনের ফলাফল খুব দীর্ঘ সময় ধরে উপভোগ করতে এবং আপনার দেহের কাঙ্ক্ষিত আকৃতি বজায় রাখতে পারবেন।